বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে দুই মাস বন্ধ থাকার পর গত ১৬ জুন বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হয়।
শর্ত হিসেবে সবার করোনামুক্তির সার্টিফিকেট আবশ্যিক করা হয়। কিন্তু করোনা নেগেটিভের সনদ নিয়ে বেশকিছু দেশে যাওয়া বাংলাদেশিদের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ফলে সেসব দেশে বাংলাদেশের সঙ্গে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
বিমানযাত্রার সময় সবাই করোনামুক্তির সার্টিফিকেট দেখিয়ে উড্ডয়নের সুযোগ পেয়েছিলেন। ফলে যেসব দেশের বিমানপথ বাংলাদেশের জন্য খুলেছিল, সেগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ শ্রমিকদের বিদেশ গমন কঠিন হয়ে পড়বে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কীভাবে করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়েও সে দেশে গিয়ে পজিটিভ হচ্ছেন সেটি খতিয়ে দেখা উচিত। নইলে অন্য দেশের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা জন্মাবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে দেশগুলোর সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ইতালির সঙ্গে বিমান চলাচল শুরু হওয়ার পর গত দুই সপ্তাহে হাজারখানেক বাংলাদেশি বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ইতালি ফিরে গেছে। কিন্তু বুধবার কাতার এয়ারওয়েজে ইতালি যাওয়া ১৬৮ বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীকে দেশটিতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ ফেরত যাত্রীদের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করে ইতালি। এর পর এক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশের সব ফ্লাইট বাতিল ঘোষণা করে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশের সঙ্গে ফ্লাইট বাতিল করলেও কাতার থেকে যাওয়া ফ্লাইট চালু রেখেছে ইতালি। তাই দোহা থেকে যাওয়া ওই ফ্লাইটটির বাংলাদেশি যাত্রীদের ইতালি প্রবেশে কোনো বাধা থাকার কথা ছিল না। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে ইতালির জাতীয় দৈনিক ইল মেসসাজ্জেরোর জানায়, কোনো বাংলাদেশি ইতালিতে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনকি তাদের বিমান থেকেও নামতে দেওয়া হবে না। এর পর তাদের দোহাগামী ফিরতি ফ্লাইটে তুলে দিয়েছে দেশটির ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট। যদিও মানবিক কারণে তাদের গ্রহণ করতে বাংলাদেশ দূতাবাস রোম এবং মিলানের বাংলাদেশ কনস্যুলেট তাৎক্ষণিক নোট ভারবাল পাঠিয়ে জোর অনুরোধ করেছিল।
কিন্তু ইতালি সরকার তার নীতি বা সিদ্ধান্তের প্রশ্নে একচুলও নমনীয় হয়নি। এদিকে কাতার এয়ারওয়েজের বাংলাদেশ অফিস গতকাল এক বিজ্ঞপিতে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি কাতার এয়ারওয়েজে ইতালি যেতে পারবে না বলে জানিয়েছে।
ইতালি প্রতিনিধি ইসমাঈল হোসেন স্বপন জানান, ইতালির মিলানে নামা ৪০ যাত্রীর ৩৯ জনকে দোহাগামী ফিরতি ফ্লাইটে ফেরত পাঠানো হয়। একজন নারীযাত্রী অপেক্ষমাণ অবস্থায় বিমানবন্দরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সুস্থ হওয়ার পর তাকেও ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাতার এয়ারওয়েজের অপর ফ্লাইটে ইতালির রোমে যাওয়া ১২৫ বাংলাদেশিকে বিমান থেকে নামতে দেওয়া হয়নি। তাদেরও ফেরত পাঠানো হয়।